Skip to main content

3D Printing ,যেটার উপর আমরা নির্ভরশীল হতে যাচ্ছি


একসময় হাতে বই লেখা হত, তারপর ফর্মায় ফেলে দ্রুত বই তৈরি করা হল,  তারপর ফটোকপি মেশিন সেটাকে আরো একটু দ্রুত করে দিল, আর এখনকার কথা,  তো সবাই জানি। কত কম সময়ের মধ্যে কত বিশাল পরিমান বই তৈরি করে ফেলা হচ্ছে।  
আর এর মূলে কিন্তু রয়েছে আধুুনিক সব প্রিন্টার। এই সব প্রিন্টারের দ্রুততা,  নিখুততা আমাদের কল্পনাকেও হার মানাচ্ছে। 
তবে এর ভবিষ্যৎ কি?
হাতে লেখার ভবিষ্যৎ ছিল,  ফর্মা, আবার ফর্মার ভবিষ্যৎ হল ফটোকপিয়ার। 
যারা একটু ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করেন তারা নিশ্চয়, একটু আন্দাজ করতে পারছেন, 3D printer নামে একটা জিনিস বেশ কয়েক বছর ধরে শোনা যাচ্ছ,  তবে আম জনতার(mango people😁) মাঝে এটা খুব একটা হাইপ তুলতে পারেনি কারন, 
বিষয়টা আমাদের প্রোয়োজনের সাথে যায় না
তাছাড়া এর ব্যবহার কেবল ছোট ছোট খেলনা বানানোতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গিয়েছিল,  বিগত সময়গুলোতে। 

3D printer এ মূলত এমন কিছু প্রিন্ট করা সম্ভব যা ত্রিমাত্রিক হবে।  যেমন একটা কলম কিংবা সাইকেলের টায়ার কিংবা আপনার জুতাও৷ অর্থাৎ, ইন্টারনেট থেকে একটা জুতার 3D মডেল ডাউনলোড করলেন, আপনার 3D printer এ সেটা প্রিন্ট করলেন এবং সেই জুতা পরে আপনি বাইরে হাটতে চলে গেলেন। 
কনসেপ্টটা খুবই সাধারন, তবে কিছুটা অবাস্তবও লাগে।  

তবে বলে রাখি,  যখন আলিফ লায়লায় এক দেশের রাজকুমার অন্য দেশের রাজকুমারীর মাথে জাদুর আয়নায় কথা বলত, তখন আমরা হয়তো সেটাকে অলৌকিক ব্যপার বলে উরিয়ে দিতাম। কিন্তু,  এখন তো আমরাই মোবাইলে video call করে থাকি, কই, সেটা তো আমাদের কাছে অলৌকিক লাগে না । 

যখন প্রথম বানিজ্যিকভাবে মোবাইল বাজারে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন কেউ কল্পনাও করেনি,  এই মোবাইল দিয়ে আর কয়েক দশক পরেই কল করা ছাড়াও আর কত কি করা যাবে, এখন তো এমন অবস্থা,  অনন্য ফিচারের ভিড়ে মোবাইল দিয়ে কল করার বিষয়টা খুব সামান্য জায়গা জুরেই রয়েছে। 
আপনি সারাদিনে কতক্ষন মোবাইল ঘাটাঘাটি করেন,  আর মোবাইল দিয়ে কতক্ষণ কল করেছেন সেটার শতকরা বের করলেই বিষয়টা পরিস্কার হয়ে যাবে।

3D printer দিয়ে কি হতে পারে,  তার ধারনা সামান্য তো পেলেন, তবে এটাকে আরো একটু মসলাদার করা যেতে পারে।

আজ থেকে ৫০ বছর আগেও মানুষ এটা ভেবে হেসে উড়িয়ে দিতে পরতো যে,  মানুষের ঘরে ঘরে টিভি আর হাতে হাতে মোবাইল হবে। তবে আমরা এখন টিভির যুগ থেকেও বেরিয়ে আসতে চলেছি, আর হয়তো খুব বেশি হলে,  ১০ বছর, তারপর টিভি চ্যানেলের কোম্পানিগুলো দেউলিয়া হবে। 

যাইহোক,   3D printing বিষয়টা ভবিষ্যতে এমন হবে যে,  এটার উপর আমরা মোবাইল, টিভির মত নির্ভরশীল হয়ে পরবো। প্রতিটি বাড়ি,  অফিসে এটার ব্যবহার থাকবে। তখন আপনাকে আর দোকানে গিয়ে কোনো কিছু কিনে সেটাকে বয়ে নিয়ে আসতে হবে না।  তখন আপনি সেই জিনিসটার 3D মডেল ডাউনলোড করবেন এবং সেটা প্রিন্ট করে ব্যবহার শুরু করে দিবেন। 
এখন আমরা কেবল ছবি, ভিডিও কিংবা লেখা ইন্টারনেটে পাঠাতে পারছি, 3D printer এর যুগে ইন্টারনেটে সকল জড় বস্তুই পাঠানো সম্ভব হবে। 
আপনি হয়তো আপনার প্রিয় ঘড়িটার একটা কপি প্রিন্ট করে আপনার বন্ধুকে  উপহার দিতে পারবেন।                   
     

একটা ছোট গল্প দিয়ে বিষয়টা শেষ করি। 


রুহান সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেছে, স্বচ্ছ কাচের জনালা দিয়ে লাল হলুদ সূর্যের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আলোর দিক তাকিয়ে ভালই লাগছে৷ আজ শরীর ভাল,  শরীর খারাপ থাকলে আলোর দিকে তাকিয়ে থাকা কষ্ট। 
আকাশে কোনো মেঘ নেই,  দু এক টুকরো যা আছে, তাও ম্কাই ড্রোনগুলো সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।  মেঘবিহীন আকাশ দেখতে ভাল্লাগেনা। কিন্তু কি আর করা, আমাদের স্টেটের গত অক্টেটের বিদ্যুৎ উৎপাদন আগের অক্টেটের চেয়ে ২৮% কমে গেছে। মেঘ থাকলে উৎপাদন আরও কমে যাবে। 
কত কাজ পরে আছে, আর আমি কিনা শুয়ে সময় নষ্ট করছি! 
মিষ্টার ট্রিন কলমের 3D মডেল করতে দিয়েছিলেন,  আগের মডেল যা দিয়েছিলাম তা নাকি উনি একটাও প্রিন্ট করতে পারেন নি।  এবারও যদি মডেল সাবমিট করতে না পারি, তবে খাবো কি। 

রুহান ঝপ করে বিছানা থেকে উঠে,  মোবাইল হাতে নিল। কি খাওয়া যায়?
নেস রেষ্টুরেন্টের গতকালের কেকটাতে ফ্যাট বেশি ছিল, ওদের মডেল ভাল না। সিওপ রেস্টুরেন্টের খুব কথা শোনা যাচ্ছে, ওদের থেকে কিছু একটা নেই। 
রুহান খুব বেছে বেছে , সস্তার দুটা ব্রেড আর 64ml সিরাপের মডেল ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে দিয়ে ,  দাত মাজতে গেল। 
বেসিনের সামনে আয়নায় নিজেকে দেখতে দেখতে মনে হল,  আজ তো মেলিনার সাথে দেখা দেখা করার কথা, সেবার দেখা করতে গিয়ে আমার ছেড়া জুতা দেখে,  খানিকটা করুনা করেই নীল একটা জুতার মডেল গিফট করেছিল। ওটা অবশ্যই পরে আসতে বলেছে। করো কারো করুনা গ্রহন করতে ভালো লাগে,  মেলিনা সেরকম একজন। 
শিগগির  জুতাটা প্রিন্ট করতে দেই,নাহলে ভূলে যাব। ব্রেড আর সিরাপ মনেহয় এতক্ষণে প্রিন্ট হয়ে গিয়েছে। 

জানালার পাশে চেয়ার পেতে খাবার নিয়ে বসল রুহান। খু্ব সখ করে খাওয়া দাওয়া করে সে। জানালার পাশ দিয়ে জেটপ্যাকে জেমিকে ফ্যাক্টরিতে যেতে দেখে মন ভার হল। এরকম একটা সাউন্ডলেস জেটপ্যাক কেনার খুব সখ তার। তবে সে আর হয় কি করে,  খাওয়া দাওয়াই যেখানে জুলুম।  

তার উপর আমার প্রিন্টারটা তো ওই জেটপ্যাকের হাই-কোয়লিটি ন্যনো বডি প্নিন্টও করতে পারবে না। আরও খরচ। 

উদাস হয়ে চেয়ারে হ্যালান দিতেই কাঠের চেয়ারটা ক্যাচ করে উঠলো। এটা তার দাদার আমলের চেয়ার, কাঠ এবং লোহার তৈরি যদিও লোহার রেশিও খুবই কম। চেয়ারটা তার বাবার যেমন যত্নের জিনিস ছিল,  তারও। আর কিছুদিন পর হয়তো এ ধরনের জিনিসপত্র জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। চেয়ারটা খুবই যত্ন করে বানানো।
সে সময় না মানুষের ছিল ন্যানো পার্টিকেল সম্পর্কে কোনো ধারনা,  না আবিষ্কার হয়েছিল 3D প্রিন্টার। তখন মানুষ প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া অবজেক্টগুলোকে রিসাইজ করে বানাত সব প্রোয়োজনীয় জিনিসপত্র।ব্যাপারটা খুবই কষ্টসাধ্য ছিল, আজকাল মানুষ এটা ভাবতেও পারে না।

শেষবিন্দু সিরাপটা চেটে খেতে খেতে রুহান দূরের কালো ধোয়ার মত কুন্ডলীর দিকে ভয় জরানো মুখে হতভম্বভাবে তাতিয়ে রইল যেটা, ওদের ভিলেজের দিকে ক্রমেই এগিয়ে আসছে……..             

এ সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে , 3D Printing-Wekiperia
    
  
    

    
             

Comments

  1. The 7 Best Slots of 2021 - LuckyClub Live
    › casino-sites › casino-sites 5 hours ago — 5 hours ago Find out the 7 Best Slots of 2021. Try over 300 luckyclub.live of the most popular slots and games on our site and claim your welcome bonus.

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

মন প্রোকৌশল, স্বপ্ন অনুপ্রেরনা আর জীবন গড়ার ফরমুলা

" মন প্রোকৌশল , স্বপ্ন অনুপ্রেরনা আর জীবন গড়ার ফরমুলা " বইটার নাম , শুনতে অদ্ভুত এবং অস্বাভাবিকভাবে বড়। নাম শুনেই সহজেই বলে দেয়া যায় যে বইটা মূলত কিসের ওপর লেখা। হ্যা , মোটিভেশনাল ক্যাটাগরির বই এটা। মোটিভেশনাল ক্যাটাগরির হলেও সামান্য বিশেষত্য আছে এতে। একটু পরেই তা ব্যক্ষা করছি। বাংলা ভাষায় লেখা এরকম বই খুবই কম আছে , যদিও এখন এর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।   এই বইটার যে দুইটা জিনিস আমাকে প্রথম দফাতেই চমৎকৃত করেছে সেটা হল , এর ফ্রন্ট কভারের ডিজাইনটা এবং এর ব্যক কভারে লেখা লেখকের সম্পর্কে …… এই বইটা অনেক ছোট ছোট অনুপ্রেরণা মূলক প্রবন্ধ দিয়ে ভর্তি যেগুলো কোনোভাবেই দুই পাতার বেশি নয়। খুবই ছোট ছোট প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধ গুলো অনুপ্রেরনা মূলক হলেও , আমার নিজের দৃষ্টি থেকে এই প্রবন্ধগুলো আমাদের প্রচলিত চিন্তাধারার পেছনে , প্রশ্নবোধক চিহ্ন জুরে দেয়৷ আমরা সচরাচর যেভাবে চিন্তা করি তাতে সামান্য পরিবর্তন আনতে সাহস জোগায়। বইটাকে কেন সম্পূর্ণভাবে মোটিভেশনাল ক্...

শরবতে বাজিমাত

শরবতে বাজিমাত, মুনির হাসানের লেখা এই বইটার নামটা ভারি অদ্ভুদ বটে। ভাবছেন কি বিষয়ের উপর লেখা বই, শরবত বানানোর কলাকৌশল?? নাহ্, এটা মূলত ব্যবসা রিলেটেড বই। মুনির হাসান, যার হাতে সূচনা হয়েছে, "চাকরি খুজব না, চাকরি দেব" প্লাটফর্মের। এই বইটাও উদ্দোক্তাদের আরেকটু উদ্দোক্তা হবার পথে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরনা দিয়েছেন… তবে একটু ভিন্নভাবে। বইটাতে রিচার্ড, অ্যডাম এবং জন নামের তিন বন্ধুর গল্প বলা হয়েছে যারা UK তে শরবতের ব্যবসা শুরু করে ইনোসেন্ট নামে। এই তিন বন্ধুই একসাথে কেমব্রিজ থেকে পাশ করে বের হয় এবং যথারীতি চাকরিতেও ঢুকে যায়, কিন্তু কেমব্রিজে থাকা অবস্থাতেই তাদের মাথায় ব্যবসার চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে এবং এক পর্যায়ে তারা চাকরি ছেড়ে ১৯৯৮ সালে ৫০০ পাউন্ড সম্ভল নিয়ে "ইনোসেন্ট" নামে একটা স্মুদির(যাকে খাস বাংলায় শরবত বলা চলে) কোম্পানি শুরু করেন যেটি কিনা আজ ইউরোপ জুরে প্রতিদিন তিনলাখ বোতল বিক্রি হয়। তিন বন্ধুর এই ব্যবসার গল্পকে কেন্দ্র করেই লেখক তার নিজের দৃষ্টিকোন থেকে বইটি লিখেছেন। তাদের জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে বর্ননা করে, লেখক উপদেশ দিয়েছেন একজন...